যারা নতুন উমরায় যেতে চান তারা নিচের লেখা থেকে উপকৃত হবেন , ইনশা আল্লাহ্ | Those who want to go to the new Umrah will benefit from the following writing, Insha Allah

Those who want to go to the new Umrah

প্রথম পরামর্শ: (First Advice)

উমরার যাওয়ার সময় সবচেয়ে প্রথম খেয়াল রাখতে হবে আপনার সাথে যে মুয়াল্লিম হিসেবে যাচ্ছেন তিনি কেমন ! দরকার হয় তার সাথে আগে যারা হজ করতে গিয়েছে বা ওমরা করতে গিয়েছে তাদের কাছ থেকে জেনে নিন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এদের বাংলাদেশে চেহারা একরকম কিন্তু সৌদি তে যাওয়ার পরে চেহারা ভিন্ন রকম হয়ে যায়।. কিছু মুয়াল্লিম যাদের উদ্দেশ্য থাকে ব্যবসা , তারা মূলত সৌদিতে যায় ব্যবসা করার জন্য । এদের উদ্দেশ্য থাকে হাজীদের সহায়তা করার চেয়ে নিজের আখের গোছানো।একদম নতুন একটা দেশ , নতুন একটা পরিবেশে ভাল মোয়াল্লেম না হলে খুব বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যেতে হয়। .★

দ্বিতীয় পরামর্শ: (Second Advice)

মাসলা মাসায়েল জেনে যাওয়া । যে এবাদত আমরা করবো সেই এবাদত করার জন্য পর্যাপ্ত মাসলা-মাসায়েল জানা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। সঠিক মাসলা-মাসায়েল এর অভাবে এবাদত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আপনি যে উত্তম কাজে যাচ্ছেন সে কাজের জন্য আপনার উচিত এ বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান লাভ করা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় আমরা মুয়াল্লিমের উপরে নির্ভরশীল হয়ে থাকি। একটা গ্রুপে অনেক মানুষ থাকার কারণে একজন মুয়াল্লিম সবাই কে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেনা । আর যদি ধান্দাবাজ কিসিমের মুয়াল্লিম হয় , তাহলে দেখা যাবে কোন ফাঁকে আপনার ওয়াজিব ছুটে গেছে আপনি নিজেই টের পাবেন না। যদি আপনার সঠিক মাসলা-মাসায়েল জানা না থাকে। এক্ষেত্রে আমি দুইটি বইয়ের সহায়তা নিয়েছিলাম ১) উমরা কিভাবে করবেন লেখক: অধ্যাপক মোঃ নুরুল ইসলাম মক্কী২) উমরাহ মদিনা জিয়ারত ও দোয়া লেখক: ড: আবুবকর মুহাম্মদ যাকারিয়া .★

তৃতীয় পরামর্শ:(Third Advice)

সৌদি তে যাওয়ার আগে অবশ্যই মক্কা এবং মদিনায় যে স্থানগুলো ওমরার সাথে সম্পৃক্ত ও আপনি জিয়ারত করতে চাচ্ছেন এবং দর্শনীয় সেই স্থান গুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নিয়ে নিন । আগে থেকেই এ বিষয়ে পড়ালেখা করে নিলে আপনার জন্য অনুভব করা সহজ হবে। মক্কা-মদিনা ছাড়াও আরো অনেকগুলো বরকতময় স্থান আছে , এগুলো লিস্ট করুন এবং অবশ্যই এখানে জিয়ারত করুন । এক্ষেত্রে আমাকে একটা বই খুব সাহায্য করেছে , আপনারাও দেখতে পারেন১) পবিত্র মক্কা মদিনা শরীফের ইতিহাস সম্পাদনাঃ শায়েখ শফিউর রহমান মোবারকপুরী প্রকাশক: মীনা বুক হাউস .★

চতুর্থ পরামর্শ:(Fourth Advice)

জামা কাপড় কেনা , স্বর্ণ কেনা এসব মার্কেট করার চিন্তা বাদ দিন , যাচ্ছেন ইবাদত করার জন্য , এখানকার প্রতিটা মুহূর্ত খুব মূল্যবান। একজন হাজী সাহেবের জন্য একেক বিমানে একএক ওয়েট এর মাল বহন করা যায় । যেমন বাংলাদেশ বিমানে একটা পাসপোর্টধারীদের জন্য 25 কেজির ওজনের বক্স এর 2 টি বক্স , অর্থাৎ মোট 50 কেজি ওজনের মাল বহন করা যাবে। এয়ারপোর্ট এর নির্দিষ্ট স্থানে পাসপোর্ট দেখালে ৮.৫ রিয়াল এর বিনিময় একটা পাঁচ লিটার ওজনের জমজমের পানি দিয়ে দিবে। তাহলে জমজমের পানি সহ আপনার ওজন যদি 55 কেজি হয় আপনাকে কিন্তু পানি আনতে দেবে না, এয়ারপোর্ট থেকে রেখে দেবে। তাই আপনি যে প্যাকেট করবেন সেই প্যাকেট যেন দুইটি বক্স মিলিয়ে 45 কেজির বেশি না হয়। .সাধারণত আমরা খেজুর এবং জমজমের পানি নিয়ে আসি , এগুলো বরকত ময় জিনিস। অন্য কোন মার্কেট না করে পর্যাপ্ত পরিমাণ খেজুর কিনতে পারেন আত্মীয়দের মেহমানদারী করার জন্য , সাথে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমজমের পানি পাবেন।.এজন্য আগেই জেনে নিন খেজুরের পাইকারি মার্কেট সম্পর্কে।.★

পঞ্চম পরামর্শ:(Fifth Advice)

মক্কা এবং মদিনায় তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য আযান হয় , সৌদি তে গিয়ে প্রথম যেখানে যাবেন মক্কা অথবা মদিনায় ওখানকার নামাজের সময় জেনে নিন। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে কয়েকটা খেজুর খাবেন সাথে জমজমের পানি পান করুন। সকালের নাস্তা হয়ে গেছে ।. এবার তাহাজ্জুদএর আযান দেওয়ার আগেই বাসা থেকে বেরিয়ে যান , তাহাজ্জুদ নামায , ফজরের নামাজ ও জোহরের নামাজের পরে বাসায় আসুন , দুপুরের খাবার খেয়ে আছরের আজানের আগ পর্যন্ত ঘুমিয়ে , নামাজের জন্য বেরিয়ে যান , এরপরে আসরের নামাজ ,মাগরিবের নামাজ ও এশার নামাজ পড়ে বাসায় আসুন । মক্কার কাবা চত্বরে ও মসজিদে নববীতে প্রবেশের সাথে সাথে এতেকাফের নিয়ত করে নিন। আমি এই রুটিন ফলো করেছিলাম। এতে সময় নষ্ট কম হয় ।.★

ষষ্ঠ পরামর্শ :(Sixth Advice)

যাওয়ার সময় সাথে করে কিছু জিনিস অবশ্যই নিয়ে যাবেন , এগুলো হ্যান্ড ব্যাগে রাখবেন না , বুকিং এ দিয়ে দেবেন।

  • ১) একটা প্লাস্টিক অথবা মেলামাইনের প্লেট , ঢেকে রাখা যায় এমন । আমি আর এফ এল এর রুটির বক্স নিয়েছিলাম। গোল রুটি রাখা যায় এমন বক্স একদম ঢাকনাসহ এটা দিয়েই প্লেটের কাজ করেছি ।
  • ২) একটা প্লাস্টিকের মগ (500 এমএল পরিমাণের নেবেন , যদি কখনো স্যালাইন খাওয়ার প্রয়োজন হয় যেন মাপামাপির ঝামেলা না লাগে সেজন্য )
  • ৩)কিছু ওষুধ , যেমন এক পাতা নাপা , ফ্লাজিল , ডমপেরিডন , লোসেকটিল , কয়েক পাতা স্যালাইন ইত্যাদি ।আর যারা ডায়াবেটিস বা প্রেসারের ওষুধ খাচ্ছেন তা তো অবশ্যই সাথে এগুলো নিয়ে যাবেন।
  • ৪) সব সময় হাটা যায় এমন নরম প্লাস্টিকের /রাবারের সেন্ডেল
  • ৫) এক বক্স মাস্ক , মাস্ক ছাড়া বাইরে হাটার কোন উপায় নেই।
  • ৬) একটা এন্ড্রয়েড ফোন , বর্তমানে সৌদি সরকারের Tawakkalna নামক অ্যাপস ইউজ করতে হয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে , বাসায় যোগাযোগের জন্য ইমু ব্যবহার করা যাবে , অনেক হোটেলে ফ্রি ওয়াইফাই এর ব্যবস্থা আছে । কোন সিম না কিনলেও চলে যাবে। তবে সেলফি তোলার রোগ থাকলে , আগে থেকেই এ বিষয়ে সংযত হয়ে যাবেন।
  • ৭) এখানে মক্কা এবং মদীনা হেরেম শরীফে পানির ব্যবস্থা আছে। এখান থেকে শুধু 500ml এর একটা পানির পট সাথে করে নিয়ে গেলেই হবে। প্রয়োজনে বোতলে পানি ভরে নিয়ে আসতে পারবেন । আর আপনি যতক্ষণ মসজিদে থাকবেন ততক্ষণ ওইখানে পানির ব্যবস্থা থাকবে।
  • ৮) ব্রাশ, পেস্ট ,সাবান, শ্যাম্পু , ভ্যাসলিন/ পেট্রোলিয়াম জেলি, সরিষার তেল যা প্রয়োজন সাথে করে নিয়ে যাবেন। তবে আমি ওইখানে একটা ছোট ভিমবারের অভাব খুব অনুভব করেছি । খাবার পর প্লেট পরিষ্কার করার জন্য।
  • ৯) মুয়াল্লিম এর সাথে পরামর্শ করে এহরাম এর কাপড় , সার্বক্ষণিক ব্যবহার করার জন্য সাইট ব্যাগ , জুতা রাখার জন্য ছোট ব্যাগ ইত্যাদি নিয়ে যাবেন । (এসব সৌদি থেকে কিনবেন এই চিন্তা বাদ দেন , এতে সময় নষ্ট হবে এবং অনেক বেশি টাকা খরচ হবে )