কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত ও কুরআন ভুলে যাওয়ার শাস্তি | The virtue of reciting the Qur’an

The virtue of reciting the Qur’an

কোরআন তিলাওয়াতের ফজিলত (The virtue of reciting the Qur’an)

হযরত আবু মুসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে উদ্ধৃত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, মু’মিন কোরআন তেলাওয়াত করে, তার উপমা হলো কমলালেবুর মতো, যার সুগন্ধি অতি উত্তম এবং খুবই সুস্বাদু। আর যে,মু’মিন কোরআন তেলাওয়াত করে না, তার উপমা খেজুরের মতো, যার স্বাদ মজাদার কিন্তু সুগন্ধি মোটেই নাই । পক্ষান্তরে যে পাপী ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করে,তার উপমা সুগন্ধি ফুলের মত,যার সুগন্ধি অতি উত্তম অথচ স্বাদ অতি তিক্ত ।আর যে পাপী ব্যক্তি কোরআন তেলাওয়াত করে না, তার উপমা মাকাল ফলের মতো, যার স্বাদ অতি তিক্ত কোনো সুগন্ধির লেশমাত্র নেই (বোখারী,ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ)

কোরআন তিলাওয়াতকারীর পুরস্কার (Reward for reciting the Qur’an)

হযরত আবু হুরায়রা ( রাঃ ) থেকে উদ্ধৃত । নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন , যে ব্যক্তি তার মু’মিন ভাই থেকে দুর্নিয়ার একটি বিপদ দূর করবে , আল্লাহ্ তার থেকে পরকালের একটি বিপদ দূর করে দিবেন । আর যে ব্যক্তি অসচ্ছল ব্যক্তির জীবনযাত্রা সহজ করে দিবে , আল্লাহ্ পাক দুনিয়া ও আখেরাতে তার সমস্যা সহজ করে দিবেন । আল্লাহ্পাক বান্দার সহায়তায় থাকেন , যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দা তার মুসলিম ভাইয়ের সহায়তায় থাকে । যে ব্যক্তি ইল্ম অর্জনের পথে চলবে , আল্লাহ্ পাক তার জন্য তার জান্নাতের পথকে সহজ করে দিবেন । যখন কিছু লোক আল্লাহর কোন ঘরে আল্লাহ্ পাকের কিতাব তিলাওয়াত করতে ও তা অধ্যয়ন করতে একত্রিত হয় , তখন তাদের ওপর সাকীনা ( প্রশান্তি ) অবতীর্ণ হয় । রহমত তাদের আচ্ছাদিত করে রাখে । ফেরেশতা তাদের পরিবেষ্টন করে । আর আল্লাহ্ পাক তাঁর নিকটস্থ ফেরেশতাদের সাথে তাদের ব্যাপারে আলোচনা করেন । ( মুসলিম , তিরমিযী , আবু দাউদ , ইবনে মাজাহ্ , মুসনাদে আহমদ )

কুরআনে কারীম তেলাওয়াতের ফায়দা (The benefits of reciting the Qur’an)

কুরআনে কারীম তেলাওয়াত করলে প্রতিটি হরফে কমপক্ষে ১০ টি করে নেকী পাওয়া যায় , চাই কুরআনের অর্থ বুঝে পড়ুক বা না বুঝে পড়ুক । এক শ্রেণীর লোক বলে যে , কুরআনের অর্থ না বুঝে পড়লে কোন ফায়দা নেই , তাদের কথা ভুল । তবে কুরআন তেলাওয়াতের দ্বারা ছওয়াব পাওয়ার জন্য সহীহ – শুদ্ধভাবে তাজবীদ সহকারে তেলাওয়াত করা চাই । প্রত্যেকটা হরফকে সঠিক মাখরাজ থেকে পূর্ণ সিফাত সহকারে আদায় করাকে তাজবীদ বলে । তাজবীদ রক্ষা করে কুরআন পাঠ করা ফরয । হরফের মাখরাজ ও ছিফাত সম্পর্কে “ আহকামে যিন্দেগী ” গ্রন্থের শেষে প্রয়োজনীয় নিয়ম – কানুন বর্ণনা করা হয়েছে । সেটা দেখে নিন । তবে মনে রাখতে হবে , শুধু এসব নিয়ম – কানুন ও বর্ণনা পড়ে কুরআন সহীহ – শুদ্ধভাবে পাঠ করা সম্ভব নয় । যিনি সহীহ – শুদ্ধভাবে কুরআন পাঠ করতে পারেন , এরূপ লোকের নিকট মশক করা ব্যতীত কুরআন সহীহ শুদ্ধভাবে পাঠ শিক্ষা করা যায় না ।

কোরআন ভুলে যাওয়ার শাস্তি (Punishment for forgetting the Qur’an)

হযরত জ্বালাক ইবনে হাবীব ( রাঃ ) থেকে উদ্ধৃত । নবীকরীম সল্লাল্লাহ আলইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে লোক কোরআন শিখল , তারপর কোন ওষর ছাড়াই তা সে ভুলে গেল , প্রত্যেক আয়াতের পরিবর্তে তার একটি মর্যাদা কমিয়ে দেয়া হবে । আর কিয়ামতের দিন সে হাতকাটা অবস্থায় উপস্থিত হবে । যাহ্হাক ( রহঃ ) বলেন , কৃত পাপের দরুন মানুষ কোরআন শিখে তা ভুলে যায় । তোমাদের কৃত পাপাচারের কারণেই তোমাদের ওপর বিপদ নেমে আসে আর তিনি অনেক মাফ করে দেন । ( সূরা শূরা , আয়াত ৩০ ) আর কোরআন ভুলে যাওয়ার চেয়ে বড় বিপদ আর হতে পারে না ।