ফেরেশতা, আম্বিয়া, সালেহীন, উলামা, কাবাঘর, | আযান, নামায, হজ্জ ইত্যাদি স্বপ্নে
দেখা
স্বপ্নে কোন ফেরেশতার দর্শন লাভ ( Gain the vision of an angel in a dream)
যে ব্যক্তি স্বপ্নে কোন ফেরেশতার দর্শন লাভ করে, এটা তার জন্য দুনিয়াতে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও বুযুর্গী হাসিলের নিদর্শন আর নিজ শহরের অধিবাসীদের সফলতা লাভের পরিচয়। উচ্চ মর্যাদাশালী কোন ফেরেশতা দেখতে পাওয়া কল্যাণ, শাহাদতের মর্যাদা, সজীবতা, উপকারী বৃষ্টিপাত, পর্যাপ্ত রিযিক ও নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্যমূল্য হ্রাস পাওয়ার লক্ষণ।
ফেরেশতা যদি মসজিদে দেখতে পায়, তাহলে অর্থ হবে- এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বীনের ব্যাপারে ত্রুটি রয়েছে। তাদেরকে বেশী বেশী দো‘আ-ইস্তেগফার, নামায, সদকা এবং দান-খয়রাত অধিক পরিমাণে করার হুকুম দেয়া হয়েছে। কিন্তু ফেরেশতা বাজার-বন্দরে দেখা গেলে উদ্দেশ্য হবেলােকদেরকে ওজনে কম-বেশী করতে নিষেধ করা হয়েছে। আর কবরস্তানে দেখা গেলে ব্যাখ্যা নিতে হবে, আলেম-উলামা, ফকীহ ও দ্বীনদার-পরহেযগার লােকদের মধ্যে ব্যাপকহারে রােগ-বালাই ছড়িয়ে পড়বে। স্বপ্নে কেউ কোন অপরিচিত লােক দেখতে পেল, কিন্তু লােকেরা তাকে ফেরেশতা বলেই উল্লেখ করল, তাহলে বুঝতে হবে ইনি কোন মর্যাদাবান ফেরেশতাই বটেন।
স্বপ্নে নবী করীম (সাঃ)-এর যিয়ারত (Visiting the Prophet (peace be upon him) in a dream)
কেউ স্বপ্নে নবী করীম (দঃ)-এর যিয়ারত লাভে ধন্য হল এবং সেখানে কোন অপ্রিয় কথা বা অপ্রীতিকর দৃশ্য পরিলক্ষিত হয়নি, তাহলে এটা তার জন্য সুসংবাদের আলামত। তার দ্বারা নেক আমল সাধিত হওয়ার লক্ষণ। পক্ষান্তরে স্বপ্নে অপ্রীতিকর কিছু দেখা গেলে বুঝতে হবে- স্বপ্নদ্রষ্টার জীবনে দুঃখ-কষ্ট, অভাব ও সংকট দেখা দেবে।
কেউ নবী করীম (দঃ)-কে অনুর্বর শুষ্ক ভূমিখণ্ডে দেখতে পেলে সে স্থান সবুজ, শস্য-শ্যামল হয়ে উঠবে। কেউ তাঁকে বিপদ-মুসীবতকালে দেখতে পাওয়ার অর্থ আল্লাহ তার সকল বিপদাপদ দূর করে দেবেন। কেউ স্বপ্নে দেখল, নবী করীম (দঃ) কারাে আঙ্গিনায় উপস্থিত। এর অর্থ- সে স্থানে অগ্নিকাণ্ড কিংবা অন্য কোন উপায়ে
ধ্বংস নেমে আসবে। কেউ তাকে অপূর্ণ দেহ, অসুস্থ, রুগ্ন, মৃত কিংবা বিকৃত কোন অবস্থায় দেখতে পেলেও স্বপ্নের কোন কল্যাণ নেই, এটি অশুভ স্বপ্ন। একে দর্শনকারী ব্যক্তির দ্বীনদারীর মধ্যে ত্রুটির আলামত বলে মনে করতে হবে।
কেউ দেখল, তিনি সুন্দর পােশাকে বিভূষিত। এটি দ্বারা বুঝাবে তাঁর উম্মত দ্বীন-দুনিয়া উভয় জগতে উত্তম হালে আছে। নবী করীম (দঃ)- কে কেউ চলমান অবস্থায় দেখতে পেল। অর্থ হবে, নিজ উম্মতকে তিনি জিহাদের হুকুম দিচ্ছেন। কিন্তু একে দর্শনকারীর দ্বীনদারীর মধ্যে ত্রুটি থাকার আলামত বলেও বুঝতে হবে।
কেউ স্বপ্নে দেখল, নবী করীম (দঃ) হজ্জ পালন করছেন। ব্যাখ্যা হবেদর্শনকারী ব্যক্তির হজ্জব্রত পালনের ভাগ্য হবে। কেউ দেখল, নবী (দঃ) ওয়ায করছেন। অর্থ হবে- তার উম্মত শরীঅতের আনুগত্যে এগিয়ে যাবে। কেউ স্বপ্নে | দেখল, রসূলে করীম (দঃ) আয়নায় চেহারা দেখছেন। ব্যাখ্যা হবে- নিজ উম্মতকে তিনি আমানত আদায়ে উদ্বুদ্ধ করছেন।
এক ব্যক্তি নবী করীম (দঃ)-কে আহাররত অবস্থায় দেখতে পেল। অর্থ হবেনিজ উম্মতকে তিনি যাকাত আদায়ে উৎসাহিত করছেন। কেউ স্বপ্নে দেখল, নবী করীম (দঃ) আপন পরিধেয় পােশাক মােবারকের মধ্য হতে কোন বস্ত্র তাকে পরিয়ে দিচ্ছেন, অথবা নিজের আংটি, তরবারি কিংবা এ জাতীয় অন্য কিছু দান করছেন। তাহলে ব্যাখ্যা হবে- রাজত্ব, শাসন ক্ষমতা, ফিকাহ শাস্ত্রীয় জ্ঞান, ইবাদত-বন্দেগী ইত্যাদির মধ্য হতে যাই কিছু সে প্রাপ্ত হােক, তাতে সে চরম উন্নতি লাভ করবে।
অন্য নবীগণকে স্বপ্নে দেখার পূর্ববর্তী নবীগণকে স্বপ্নে দেখা সজীবতা, বৃষ্টিপাতের প্রাচুর্য, জিনিসপত্রের সস্তা দর, সুসংবাদ, সকল ক্ষেত্রে বরকত, সফলতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইতােপূর্বে বর্ণিত ফেরেশতাগণকে স্বপ্নে দেখার ন্যায় অর্থবােধক। কেবল এক বিষয়ে পার্থক্য রয়েছে যে, আম্বিয়া (আঃ)-কে দর্শনের ফলে শাহাদতের মর্যাদা লাভের কোন সম্ভাবনা নেই, যেমনটি বলা হয়েছে ফেরেশতা দর্শনের ব্যাখ্যায়। | কেউ স্বপ্নে দেখল, পূর্ববর্তী নবীগণের মধ্য হতে কোন একজন নবীর রূপে সে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় ব্যাখ্যা হবে। উক্ত নবীর উপর যে সকল বিপদ-মুসীবত গত হয়েছে, দর্শনকারীও সে সমস্ত বিপদ-বিড়ম্বনার শিকার হবে। কিন্তু পরিশেষে সকল দুঃখ-যাতনা, কষ্ট-মুসীবতের পেষণ থেকে মুক্তিলাভ করে দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণ-কামিয়াবী ও মকবুলিয়াতের মর্তবা হাসিল করে ধন্য হবে। একই ভাবে স্বপ্নে আলেম-উলামা, পীর-আওলিয়া ও নেক লােকের দর্শন | লাভ করা অতিশয় কল্যাণকর ব্যাপার।
স্বপ্নযােগে কাবা দর্শন (Dream visit to Kaaba০
স্বপ্নযােগে কাবা দর্শন ও কা’বাঘরের ব্যাখ্যা হল—তা মুসলমানদের ইমামের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। যে ব্যক্তি কাবাঘরের মধ্যে কোন প্রকার কম-বেশী (পরিবর্তন) লক্ষ্য করবে, এর অর্থ, যে পরিমাণ কম-বেশী সে দেখতে পেল সমপরিমাণ বেশ-কম সমকালীন ইমামের মধ্যে প্রকাশ পাবে। খানায়ে কা’বা দর্শনের ব্যাখ্যা কোন কোন সময় শান্তি ও নিরাপত্তার অর্থবােধক হয়ে থাকে। তাই কেউ যদি পবিত্র মক্কা নগরী ব্যতীত অন্য কোন শহরে কা’বাঘর দেখতে পায়, তাহলে এর ব্যাখ্যা হল উক্ত শহরের বাসিন্দাগণ শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার অধিকারী হবে।কেউ যদি কা’বাঘর দেখতে পায় এবং স্বপ্নযােগে তার তওয়াফ করে আর হজ্জের কিছু নিয়মও সম্পাদন করে, তাহলে এটা তার দ্বীন-ঈমানের মধ্যে কল্যাণের লক্ষণ। স্বপ্নযােগে কা’বাঘর দর্শনকারী ব্যক্তি সর্বদা শান-শওকত, আঁকজমক, শান্তি-সমৃদ্ধি ও বিজয়ীরূপে জীবন কাটাবে। কেননা, কা’বাই হল মূল উদ্দেশ্য এবং আশা-আকাংখার চূড়ান্ত কেবলা। কেউ স্বপ্নে দেখল, কাবাঘরের প্রতি সে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছে অথবা এর উপরিভাগে নামায পড়েছে, এটা তার ইসলাম থেকে মুখ ফিরানাে এবং দ্বীন বর্জন করার নিদর্শন।
ঘটনা ঃ এক ব্যক্তি হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়া (রহঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে ঘটনার বিবরণ শুনাতে শুরু করল । আমি স্বপ্নে দেখলাম কা’বাঘরের উপর নামায পড়ছি। হযরত সাঈদ বললেন : তুমি আল্লাহকে ভয় কর। আমার মনে হয় তুমি দ্বীন ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে গিয়েছ। লােকটি সকাতরে আরয করল ঃ বিগত দুই মাস যাবত আমি করিয়া মতবাদের অনুসারী হয়ে গিয়েছি। হুযূর! এখন আমি এ মতবাদ থেকে আপনার হাতে তওবা করে নিলাম।
এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখল, সােজা কেবলামুখী হয়ে সে নামায আদায় করছে। এটা তার আল্লাহর পক্ষ হতে হেদায়তপ্রাপ্তি এবং রসূলুল্লাহ (দঃ)-এর সুন্নতের উপর আমল করার নিদর্শন। কিন্তু শর্ত হল, রুকু-সিজদা, অন্যান্য হুকুমআহকাম যথাযথ এবং খুশূ-খু তথা পরিপূর্ণ একাগ্রতার সাথে আদায় করতে হবে। কেননা, নামায আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য লাভের উপায় এবং দ্বীনের ভিত্তিস্বরূপ। যদি নামাযের মধ্যে কোন প্রকার ত্রুটি দেখতে পায়, তাহলে বুঝতে হবে, তার দ্বীনের মধ্যে সে পরিমাণ ক্রটি রয়েছে, যতটুকু সে দেখতে পেয়েছে। | এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখল কেবলা হারিয়ে ফেলেছে, তালাশ করেও কেবলার দিক খুঁজে পাচ্ছে না। এটা দ্বীনের ব্যাপারে তার দিগভ্রান্ত ও পথহারা হওয়ার লক্ষণ। স্বপ্নে দেখল নামাযে কিছু বাড়িয়ে দিয়েছে। এর অর্থ হবে, ইসলামের কোন রুকন বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে তার আপত্তি অথবা সন্দেহ রয়েছে। কেউ স্বপ্নে দেখল কেবলার বিপরীতমুখী হয়ে নামায পড়েছে। অর্থ হবে- সে যেন কদরিয়া (তথা ভ্রান্ত কোন মতবাদের অনুসারী) হয়ে গেল। আর যদি দেখতে পায় পশ্চিমমুখী হয়ে নামায আদায় করেছে, তাহলে এটা তার জবরিয়া সম্প্রদায়ে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাওয়ার নিদর্শন। কেননা, পূর্বদিক নাসারা তথা খৃস্টানদের কেবলা আর পশ্চিমদিক ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের।
অনুরূপ কেউ স্বপ্নযােগে দেখতে পেল- সে ইয়াহুদী, খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজকে পরিণত হয়েছে। এর ব্যাখ্যা হল- সে তাদের প্রিয়ভাজন হবে এবং তাদের বিপদে দ্রুত এগিয়ে যাবে। কেউ দেখতে পেল, সে মূর্তিপূজায় লিপ্ত আছে। এর অর্থ হলসে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরােপ করবে এবং মিথ্যা ও ভ্রষ্টতার কথা বলে বেড়াবে। তদুপরি সে ব্যক্তির মদ্যপানে অভ্যস্ত হওয়া এবং পাপাচারে লিপ্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। উপাস্য মূর্তিটি রূপার তৈরী হলে হয়তাে সে পাপকর্মের নিকটবর্তী হয়ে পড়বে অথবা কোন নারী সম্পর্কে মিথ্যা রটনায় জড়িয়ে যাবে। মূর্তিটি সােনার তৈরী হলে নিজের জন্যে ক্ষতিকর, অপসন্দনীয় বিষয়ের সম্মুখীন হবে। মূর্তিটি কাঠের তৈরী হলে সে দ্বীনের দৃষ্টিকোণ থেকে পাপাচারী লােকের সুহৃদ ও অন্তরঙ্গ বন্ধু হিসাবে ঘনিষ্ঠ হবে। কিন্তু মূর্তিটি যদি লােহা কিংবা তামার তৈরী দেখতে পায়, তাহলে এটা তার দুনিয়া-অন্বেষী হওয়ার নিদর্শন।
কেউ স্বপ্নে দেখল, সে অগ্নিপূজায় লিপ্ত আছে। এটা তার দ্বীনী ব্যাপারে শয়তানের প্ররােচনা ও অবৈধ হস্তক্ষেপ দেখতে পাওয়ার আলামত। উপাস্য আগুনে যদি শিখা না থাকে, বরং স্বাভাবিক হয়, তাহলে সে অবৈধ সম্পদ ও হারাম মাল অন্বেষণকারী হবে। কেউ স্বপ্নে দেখল, সে লােকদের ইমামতির দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু যদি তার কেবলা সঠিক থাকে, তাহলে ব্যাখ্যা হবে-সে ব্যক্তি একদল লােকের অধিনায়ক বা আমীর নিযুক্ত হবে এবং অধীনস্থদের প্রতি ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু কেবলা যদি ঠিক না থাকে, তবে শাসন আমলে অধীন লােকদের উপর সে যুলুম-নির্যাতন চালাবে।
আযান বিষয়ক স্বপ্ন (Azan dreams)
আযান বিষয়ক স্বপ্ন হজ্জের মওসুমে কেউ স্বপ্নে আযান শুনতে পেল, এটা তার হজ্জ আদায় করার আলামত। কোন সময় এর অর্থ আবার এটাও হতে পারে- দ্বীনের ব্যাপারে তার উন্নতি ও বুযুর্গী হাসিল হবে। কিন্তু হজ্জের মাসগুলাে ছাড়া অন্য সময় যদি আযান শুনতে পায় অথবা স্বপ্নের মধ্যে সব সময়, সকল মওসুমে এবং পথে-ঘাটে আযান হচ্ছে মর্মে যদি আওয়াজ শুনতে পায়, তাহলে এটা লােকের মধ্যে সঠিক ও সুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পূর্ব-লক্ষণ।
মিনারা ঃ স্বপ্নযােগে কেউ দেখতে পেল মসজিদের মিনারা ভেঙ্গে পড়েছে, এটা স্থানীয় লােকজনের বিভিন্ন মাযহাবে বিভক্ত হয়ে পড়ার নিদর্শন। কেউ স্বপ্নে দেখল | সে আযান দিয়েছে বটে, কিন্তু সম্পূর্ণ করতে পারেনি, অথচ ব্যক্তি হিসাবে সে ন্যায় ও সত্যপরায়ণ, অধিকন্তু তার এ আযান দেয়া হয়েছে হজ্জের মাসগুলােতে, এমতাবস্থায় সে হজ্জের সফরে যাবে ঠিক, কিন্তু হজ্জ সম্পাদন তার পক্ষে সম্ভব হবে না। তার আযান যদি হজ্জের মওসুম ব্যতীত ভিন্ন সময় দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে এর অর্থ হবে, সে চুরি করবে। আর এ চুরি দ্বারা তার বৈষয়িক কোন উপকার হবে না। অথচ চোর হিসাবে তার দুর্নাম লােক সমাজে ছড়িয়ে পড়বে। | কেউ স্বপ্নে দেখল- সে মসজিদ নির্মাণ করেছে। এর ব্যাখ্যা হবে একদল লােকের সাথে সে কোন কল্যাণমূলক কাজে ভূমিকা পালন করবে অথবা কারাে বিয়ে সম্পাদন কর্মে সে শরীক থাকবে। এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখল- সে এমন ভাষায় আযান দিচ্ছে, যে ভাষা তার অজ্ঞাত। এর অর্থ, সে একজন পাকা চোর। এক লােক স্বপ্নে দেখল- সে হাঁচি দিয়েছে এবং এর জবাবে “ইয়ারহামুকাল্লাহ” বলা হয়েছে। এটা তার জন্য হজ্জ ও উমরা করার সুসংবাদ। কেউ স্বপ্নে দেখল- সে মাথা মুণ্ডন করেছে। স্বপ্ন যদি হজ্জের মওসুমে হয়, তাহলে সে হজ্জে গমন করবে। কিন্তু। সময়টা হজ্জ মওসুম না হলে অর্থ হবে, তার মূলধন শেষ হয়ে যাবে। এর বিস্তারিত বর্ণনা ইনশাআল্লাহ পরে যথাস্থানে প্রদত্ত হবে।
কেউ স্বপ্নে দেখল, মিম্বরে দাড়িয়ে সে ওয়ায করছে। সে যদি এর যােগ্য লােক হয়, তবে সেটি তার বুযুর্গী ও শাসন ক্ষমতা লাভের নিদর্শন। কিন্তু সে ওয়াযের যােগ্য না হলে তার মৃত্যুদণ্ড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘটনা ঃ বর্ণিত আছে- এক ব্যক্তি মুহাম্মদ ইবনে সীরীন (রহঃ)-এর খেদমতে উপস্থিত হয়ে বিবরণ দিল-স্বপ্নে আমি আযান দিতে দেখতে পেয়েছি। এর ব্যাখ্যায় তিনি বললেনঃ তােমার দুই হাত কাটা যাবে। লােকটি এখনাে মজলিস ত্যাগ করেনি, ইত্যবসরে দ্বিতীয় এক লােক হাজির হয়ে একই স্বপ্ন ব্যক্ত করল ঃ হযরত! স্বপ্নে দেখলাম, আমি আযান দিচ্ছি। ব্যাখ্যায় তিনি বললেনঃ তুমি হজ্জ করবে। উপস্থিত লােকেরা প্রশ্ন করল ঃ হুযূর! স্বপ্ন তাে একই, তাহলে এই পার্থক্যের রহস্য কি? উত্তরে তিনি বললেন ঃ প্রথম লােকটিকে দেখে মনে হল, তার চেহারায় পাপাচারের চিহ্ন ফুটে আছে। তাই পবিত্র কোরআনের আয়াত
ثم أذن مؤذن ابنتها العير ام لسارقون
(অতঃপর একজন ঘােষক ডেকে বলল ঃ হে কাফেলার লােকজন! অবশ্যই তােমরা চোর। সূরা ইউসুফ ঃ আয়াত ৭০)-এর আলােকে তা’বীর দিয়েছি। পক্ষান্তরে
দ্বিতীয়জনের চেহারা পূত-পবিত্রতার জ্যোতিতে উদ্ভাসিত মনে হল। কাজেই নিম্নোক্ত
وآذن في الناس بالحج
(এবং মানুষের মধ্যে হজ্জের ঘােষণা প্রচার করে দাও। (সূরা হজ্জ ৪ আয়াত ২৭) আয়াতের আলােকে ব্যাখ্যা দিয়েছি। সুতরাং তিনি যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বাস্তবেও তাই হল।
বলা বাহুল্য, আযান কোন সময় প্রচার ও ঘােষণা অর্থও বুঝিয়ে থাকে। স্বপ্নে দেখে দেখে কোরআন পাঠ করা দর্শনকারীর ইলম ও হিকমত লাভ করার নিদর্শন। একই ভাবে স্বপ্নযােগে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা সত্য ও ন্যায়নিষ্ঠার পরিচায়ক।